বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪৮ অপরাহ্ন
Title :
ধামইরহাটে শহীদ বায়েজিদ স্বরণে বি আর টি সি যাত্রী সেবা উদ্বোধন করা হয়েছে ধামইরহাটে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্ম বার্ষিকী পালন ধামইরহাটে বিবাহিত নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেফতার ধামইরহাটে পৌর কৃষকদলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত নওগাঁয় জামায়াতের শীতবস্ত্র বিতরণ ধামইরহাটে ফসলি জমি নষ্ট করে পুকুর খননের দায়ে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা ধামইরহাটে সরকারি পরিত্যাক্ত বালু লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত আবু হানিফ ধামইরহাটে আনসার সদস্যকে মারধর করার অভিযোগ ধামইরহাটে সরকারি ভাবে ধান চাল ক্রয় উদ্বোধন ধামইরহাটে ঐতিহ্যবাহী জাতীয় উদ্যান আলতা দিঘী উন্নয়নের নামে চলছে কাজের অনিয়ম

নওগাঁর মান্দায় আড়াইশ বছরের রাজকীয় রায় বাড়ি

মাফুজুর রহমান নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৪৭ Time View

মাফুজুর রহমান নিজস্ব প্রতিবেদক

নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার প্রত্যন্ত মৈনম গ্রামে দাঁড়িয়ে আছে আড়াইশ বছরের পুরনো এক দৃষ্টিনন্দন মাটির রাজবাড়ি। চুনসুরকি দিয়ে নির্মিত কারুকাজ এবং দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জায় ভরা দোতলা এই বাড়িটি এখনও সকলের নজর কাড়ে।

স্থানীয়দের মতে, জমিদার সারদা প্রসাদ রায়ের পিতা প্রায় আড়াইশ বছর আগে পাল সম্প্রদায়ের কাছ থেকে মাটির এই দোতলা বাড়িটি কিনে নেন এবং এখান থেকেই তার জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে সারদা প্রসাদ রায়ের অধীনে এই জমিদারি পরিচালিত হতে থাকে, যা আত্রাইসহ দিনাজপুর এবং নাটোর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

এই জমিদারির সকল কর্মকাণ্ডই এই মাটির বাড়ি থেকেই পরিচালিত হতো। কথিত আছে, জমিদার সারদা প্রসাদ রায়ের দুই পুত্র ছিল—বড়দা প্রসাদ রায় এবং শরৎ রায়। বড়দা প্রসাদ রায়ের পরিবারকে বলা হতো ‘বড় তরফ’ এবং শরৎ রায়ের পরিবার ছিল ‘ছোট তরফ’। বড়দা প্রসাদ রায় তৎকালীন সময়ে ১৯৪২ সাল থেকে যুদ্ধের আগ পর্যন্ত এই এলাকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন, যা বর্তমান যুগের চেয়ারম্যানের সমতুল্য। স্থানীয় ইতিহাস অনুযায়ী, বলিহারের রাজা বিমলেন্দু রায় বাহাদুরের মাতুলালয় ছিল এই রায় বাড়ি। এই পরিবার শিক্ষা ও সংস্কৃতির অগ্রপথিক হিসেবে পরিচিত ছিল। দুর্গাপূজার সময় এ বাড়ির মুকুল রায় এবং বন্দর রায় ভারতের খ্যাতিমান শিল্পীদের নিয়ে এসে থিয়েটার এবং যাত্রাপালার আয়োজন করতেন, যা স্থানীয় হিন্দু সমাজের সাথে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা তৈরি করত। তবে বরদা প্রসাদ রায়ের সময় একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ১৯৬৪ সালের ৬ জানুয়ারি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সূত্রপাত ঘটে, যার পিছনে ছিল জমিদার পরিবারের কিছু ব্যক্তির আচরণ। দাঙ্গার ফলে এই পরিবারের ১৩ জন সদস্য নিহত হন, এবং বড়দা প্রসাদ রায়ের স্ত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় বড়দা প্রসাদ রায় কোনোমতে প্রাণে বেঁচে যান এবং পরবর্তী সময়ে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর রায় পরিবারের সদস্যরা একে একে গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। সর্বশেষ বুরন রায় ও বাবন রায় এ বাড়িতে ছিলেন। বর্তমানে ক্রয় সূত্র এই জমির মালিক এস এম ব্রুহানী সুলতান গামা। গামার বড় ছেলে এস এম আশকার ইবনে সুলতান (শান্ত) প্রতিবেদককে জানান, তার দাদু এই মাটির বাড়িটি কিনেছিলেন এবং পরে বাড়িটির ঐতিহ্য সংরক্ষণে সংস্কারকাজ করেন। দেশ-বিদেশ থেকে আগত দর্শনার্থীদের জন্য এ বাড়ি উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মৈনম গ্রামে অবস্থিত এই রায় বাড়ি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা ভিড় করেন। ইতিহাসে ভরা এই গ্রামের অন্যতম আকর্ষণ রায় বাড়ি, যা সময়ের স্রোতেও তার প্রাচীন ঐতিহ্য এবং মর্যাদা ধরে রেখেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102